টিকা বীজ হচ্ছে রোগের প্রতিরোধক যা রোগের জীবাণু বা জীবাণুর অ্যান্ট্রিজেনিক উপকরণ দ্বারা তৈরি করা হয়। পাখির দেহের ভিতর রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য টিকাবীজ প্রয়োগ করতে হয়। টিকা বীজ প্রয়োগের ফলে দেহের ভিতর রক্ত বা রক্তরসে একপ্রকার ইমিউনোগ্লোবিউলিন নামক আমিষ পদার্থ তৈরি হয়, যাকে অ্যান্টিবডি বলা হয়। এ অ্যান্টিবডিই হচ্ছে রোগ প্রতিরোধক পদার্থ। এজন্য কৃত্রিম উপায়ে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষে সুনির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে টিকা প্রদানের যে সিডিউল তৈরি করা হয় তাই টিকাদান কর্মসূচি ।
জীবিত বা মৃত বা অর্ধমৃত অনুজীব বা অনুজীব নিঃসৃত বিষ বা এনজাইম যা শরীরে প্রবেশ করানোর পর নির্দিষ্ট রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে তাই ভ্যাকসিন। কৃত্রিম উপায়ে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার পদ্ধতিকে ভ্যাকসিনেশন বলে। ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেই শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা হয়।
বিভিন্ন কারণে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যেমন-
দু'টি পদ্ধতিতে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা যায়-
ক) একক ভ্যাকসিনেশন
(খ) সম্মিলিত ভ্যাকসিনেশন।
(ক) একক ভ্যাকসিনেশনের বিভিন্ন উপায়
১. চামড়ার নিচে বা মাংসপেশিতে: সাধারণত ঘাড়ের বা পাখার চামড়ার নিচে এবং রানের বা বুকের মাংসে ইনজেকশনের মাধ্যমে ভ্যাকসিন দেয়া হয় ।
২. চোখ বা নাকের ছিদ্রের মাধ্যমে: নির্দিষ্ট ভ্যাকসিনের জন্য নির্দিষ্ট আকারের ড্রপারের সাহায্যে ১ চোখে বা নাকের এক ছিদ্র পথে ১ ফোঁটা ভ্যাকসিন দেয়া হয়।
৩. ঠোঁট ডোবানোর মাধ্যমে: নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি দ্বারা ভ্যাকসিন গুলিয়ে তার মধ্যে নাকের ছিদ্র পর্যন্ত ঠোঁট ডুবিয়ে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়।
৪. ক্ষত তৈরির মাধ্যমে: রানের কোনো স্থানে কয়েকটি পালক উঠালে একটি ছোট ক্ষত তৈরি হয়। এই ক্ষতস্থানে ভ্যাকসিন মিশ্রিত পানি দ্বারা লেপে দিলে ভ্যাকসিনেশন হয়ে যায় ।
(খ) সম্মিলিত ভ্যাকসিনেশনের উপায়
১.খাবার পানির সাথে: এই পদ্ধতিতে ভ্যাকসিন ক্লোরিনমুক্ত পানি/পাতিত পানি/বৃষ্টির পানির সাথে মিশিয়ে ঐ পানি মুরগিকে পান করানো হয়। এ পদ্ধতিতে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করলে-
২. স্প্রে ভ্যাকসিনেশন
পরিষ্কার, ক্লোরিন ও জীবাণুমুক্ত পানিতে/পাতিত পানিতে ভ্যাকসিন মিশিয়ে স্প্রে মেশিনের সাহায্যে ৩-৩.৫ ফুট উপর থেকে বাচ্চার উপর স্প্রে করতে হবে। ভ্যাকসিন স্প্রে করার সময় দরজা জানালা বন্ধ রাখতে হবে।